ফিশারির উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বা এঅআইপি’গুলি তুলনামূলকভাবে মৎস্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজারের সহিত সংযুক্ত হওয়া এবং সুবিধাপ্রদানের জন্য এক নুতন উদ্যোগ। এই যন্ত্রটি মৎস্য খাতের উন্নয়নের জন্য উদ্যোক্তাগণকে যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ এনে দেবে এবং এফআইপিগুলি ক্রমাগতভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাগণের দ্বারা সনদপ্রাপ্তির জন্য অন্তর্বতীকালীন পর্য়ায়ে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।.
২০১৩ সালে, উত্তোলনযোগ্য ফিশারিজ এবং খাদ্য হিসেবে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ পালনের জন্য গঠিত আসিয়ান পাবলিক-প্রাইভেট টাস্কফোর্স এমনটা চিহ্নিত করেন যে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে ব্যবহারযোগ্যতার উন্নয়ন ও ফিশারিজ সমূহকে এর আওতায় আনয়ন করার লক্ষ্যে এসব অঞ্চলে এফআইপি সমূহের সম্প্রসারণ করাটা জরুরী। উক্ত উত্তোলনযোগ্য ফিশারিজ এবং খাদ্য হিসেবে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ পালনের জন্য গঠিত আসিয়ান পাবলিক-প্রাইভেট টাস্কফোর্সটি একটি আঞ্চলিক এফআইপি প্রটোকল নির্দিষ্ট করার উদ্যোগ গ্রহন করতে সম্মত হয়, যা মাছ ধরার বর্তমান নিয়ম-নীতি এবং একটি আদর্শ নিয়ম-নীতির মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে সমাধানের জন্য একটি অন্তর্বতীকালীন উদ্যোগ হিসেবে কাজ করে থাকবে এবং আশিয়ান অঞ্চলের মৎস্যখাতের নিয়ম-নীতি ও ব্যবস্থাপনার দিক নির্দেশদান করবে। আশিয়ান ভিত্তিক মৎস্যজীবি, সরকার এবং এনজিও প্রতিনিধিগণ কর্তৃক গঠিত এই প্রটোকলটি ফিশারিগুলি যে বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছেন সেটারই প্রতিবিম্ব তুলে ধরে, এবং সনদ প্রদানসহ আন্তর্জাতিক কিংবা সর্বোত্তম মানদন্ডের প্রধান প্রধান বিষয় সমূহকে অন্তর্ভূক্ত করে থাকে, যেমন জলজ খাদ্য সম্পদ রক্ষা, বিরুপ পরিবেশের প্রভাবকে মোকাবেলা করা এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ এবং ফিশারিজ সমূহকে পরিদর্শন ও বন্দোবস্ত করা।.
এমন একটি ফিশারিজ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া যা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারযোগ্যতা এবং সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রয়োজনীয়তাকে আশিয়ান বাস্তবতার নিরিখে সমন্বয় সাধন করে এবং এভাবে তা ফিশারিজ সমূহকে উন্নয়নের এক তাৎক্ষনিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে থাকবে এবং যা সাধারণত এই অঞ্চলের মৎস্যজীবিগণের দীর্ঘ মেয়াদী সামাজিক, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক ব্যবহারযোগ্যতাকে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মৎস্যজীবি এবং অন্যন্য সাপ্লাই চেইন কর্তাব্যক্তিদেরকে একটা বড় ধরনের ইচ্ছা প্রকাশের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এমনটা সন্দেহ করা হচ্ছে যে, যে মানদন্ড স্থির করা হয়েছে তা অল্প পরিসরেসহ, আশিয়ান এলাকায় যথেষ্ট সংখ্যক মৎস্যপ্রকল্পের দ্বারা অর্জন এবং প্রয়োজনী বিষয়গুলিকে মেনে চলাকে উৎসাহিত করতে সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ হিসেবে বাস্তবাযনযোগ্য লক্ষকে প্রস্তাব করাটা কঠিন হবে।.
এই নথিটি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে, একটি ফিশারি বলতে যা বুঝায় তা হলো একক প্রজাতি এবং একক গিয়ার থেকে বহু-প্রজাতি এবং বহু-গিয়ার ধরনের সব কিছুকে বুঝায় যার কোন টার্গেট প্রজাতি থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে।.
একটি পরিচালনা কমিটি মানদন্ড সংক্রান্ত সকল নিয়ম-নীতি, উন্নয়ন প্রক্রিয়া এবং তার আওতা এবং যাচাই-বাচাইসহ প্রটোকল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য দায়ী থাকবেন। গত এপ্রিল ২০১৪ মাসে কমিটির জন্য একটি প্রারম্ভিক শাসন কাঠামো এবং প্রশাসনিক ধারা গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তা হলো সকল সদস্যের মধ্য হতে কমপক্ষে ৭৫% ভোট নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে।.
যে প্রটোকলটি গঠন করা হয়েছিল তা বহু-অংশীদারীত্বের মাধ্যমে একটানা পরিমার্জিত হয়ে আসছে যা স্বচ্ছ এবং এই অঞ্চলজুড়ে সেখানে পরামর্শগ্রহনমূলক প্রক্রিয়া অন্তর্ভূক্ত। এই প্রক্রিয়াটি পরিবেশ ও সামাজিক মানদন্ড স্থিরকরনের ক্ষেত্রে আইসিল (ISEAL) মৈত্রী’র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দিক-নির্দেশনাসমূহের সাথে সমন্বয় করার লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। আশিক (ASIC) মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রয়োজনীয় উন্নতির জন্য উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে মৎস্য প্রকল্পের পরিবেশগত এবং সামাজিক মানদন্ডটি নির্দেশ করে থাকে। একটি ভেরিফিকেশন কাঠামো কালের আবর্তে উদ্বুধ মানদন্ডের বিপরীতে চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে নজরদারিতে রাখেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপকে নির্দিষ্ট করে দেন।.
ভেরিফিকেশন কাঠামো
ক্রেতা এবং অন্যান্য শিল্পের অংশীদারগণের সহিত আশিক মৎস্য উন্নয়ন প্রোগ্রামের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। উক্ত ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াটি পরিচালনা কমিটির তদারকিতে সর্বদা পরিমার্জিত হয়ে থাকে।.
ভেরিফিকেশন ব্যবস্থাটি মানদন্ড অনুযায়ী ফিশারিগুলির কর্মকান্ড পর্য়বেক্ষণ করে থাকে এবং কালক্রমে সেগুলোর উন্নয়নের ধারাকে পর্য়বেক্ষণ করে থাকে। এএসআইসি মৎস্য উন্নয়ন প্রোগামে অংশ গ্রহনেচ্ছুক মৎস্যপ্রকল্পগুলির যদি বেশি সম্ভব না হয় তবে কম পক্ষে বিগত এক বছরের মানদন্ডকে মুল্যায়ন করে দেখা হয় যে তাদের উন্নতি রেকর্ড করা হয়েছে (ইতিবাচঁক নাকি নেতিবাচঁক)। অংশগ্রহনকারী ফিশারিগুলোকে এই প্রকল্পের আওতায় থাকতে হলে তাদের উন্নতির ক্ষেত্রে কমপক্ষে উন্নতির সর্বনিম্ন স্তরকে দেখাতে হবে।.
যে সকল ফিশারি এএসআইসি মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পকে কাজে লাগাতে আগ্রহী তাদেরকে তাদের মেনে চলার স্তরকে নির্দিষ্ট করতে মানদন্ড অনুযায়ী তাদের “মেনে চলা যাচাই” এর আওতায় আসতে হবে। এ পর্য়ায়ে, তাদের জন্য এমন একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে যেখানে থাকবে সময়সীমা ও উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ এবং “মেনে চলা যাচাই” এর পরবর্তী তারিখ। এই “মেনে চলা যাচাই” প্রক্রিয়াটি সনদায়ন কর্তৃপক্ষ কিংবা আলাদা কোন পরামর্শক কিংবা সংঘসুমহ যারা মুল্যায়নের আওতায় মৎস্য প্রকল্পের অংশীদারীত্বের মধ্যে রয়েছেন এমন কারো দ্বারা পরিচালিত হতে পারে।.
বাজারের চাহিদা
পরিচালনা কমিটির উদ্দেশ্য হলো যে ফিশারিগুলি অংশগ্রহন করছে এবং পরিকল্পনা মেনে চলছে বলে বিবেচিত হয়েছে যাতে করে তারা এমনটা দাবি করতে পারেন যে তারা ‘‘উন্নতি করছেন’’। ভেরিফিকেশন পরিকল্পনার আওতায় কোন পরিপালনযোগ্যতা কিংবা দায়-দায়িত্বের পালনের দাবির কোন অনুমোদন নাই।.
পরিবেশগত এবং সামাজিক কর্মকান্ডের মানদন্ড
ফিশারিগুলোর পরিবেশগত এবং সামাজিক সমস্যা বিষয়ক উন্নতির মানদন্ড নির্ধারনের ব্যবস্থা এবং উন্নয়ন পর্য়বেক্ষণকে অন্তর্বতীকালীন লক্ষ্য, প্রতিটি লক্ষ্যের আওতায় উন্নতির জন্য বহুবিধ পদক্ষেপ গ্রহন এবং মেনে চলার নির্দেশক অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে সাজানো হয়েছে। যতটা সম্ভব, উক্ত মানদন্ডগুলো (এবং সেগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন পদক্ষেপগুলো) বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্য়্যায়ের ব্যবহারযোগ্য মৎস্যপ্রকল্প এবং শ্রমের মানদন্ডের সহিত মিল রেখে প্রনয়ন করা হয়েছে। পরিবেশগত মানদন্ডটি বর্তমান মানদন্ডের সহিত সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতা রেখেই প্রণয়ন করা হয়েছে যেখানে বর্তমানের অর্জন প্রতিষ্ঠিত সর্বনিম্ন স্তরের নিচে।.
উন্নতির পদক্ষেপগুলিকে প্রনয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে:
- মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপগুলির বিষয়ে বোধগম্যতাকে ধরে রাখতে যে কোন জেলে বা ফিশারিকে অবশ্যই যতদূর সম্ভব উৎপাদন করতে হবে; এবং
- ক্রেতা, বিনিয়োগকারী, দাতা কিংবা অন্যান্য আগ্রহী অংশীদারগণকে কোন নির্দিষ্ট মৎস্যপ্রকল্পের বর্তমান অবস্থা, বিগত ইতিহাস এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে ভবিষ্যত পরিকল্পনা মূল্যায়ন করতে দেয়া যেখানে তিনি অংশীদারীত্ব গ্রহন করতে পারেন কিংবা সহায়তা প্রদান করতে পারেন।.